চার দেয়ালে আবদ্ধ হৃদয়! চটপট চারিদিক! দীর্ঘ ১০ বছর আপনি কারাগারে বদ্ধ! আপনাকে এমন এক রুমে আবদ্ধ রেখেছে, যেখান থেকে আপনি বাহিরের দৃশ্য দেখেন।আপনার সেলের পাশের রাস্তায় মানুষ মর্নিং ওয়াক করে। বাবা তাঁর সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যায়, মা তাঁর সন্তানকে নিয়ে হাঁটছে। তখন আপনার অনুভূতি কেমন হতে পারে! আপনি আপনার মা-বাবা, শৈশব, যৌবন, স্ত্রী-সন্তান, পাড়া-প্রতিবেশী, পরিবার, সমাজসহ পৃথিবীর সকল শূন্যতায় গ্রাস হবেন। এমন অনুভূতির বিপরীতে একজন মায়ের অনুভূতি পরিমাপের অযোগ্য। সন্তানের জন্য প্রতিটি মায়ের শূন্যতা অসীম। জাগতিক উন্নয়ন সভ্যতা মহত্ত্ব শিক্ষা সততা আদর্শের ধারক একজন মা। সে জন্য বলা হয়, পৃথিবী পৃষ্ঠে যা কিছু মহান তাঁর অর্ধেক করেছে নারী বাকি অর্ধেক করেছে তাঁর নর!
নারী একজন মা, যে জন্ম দেয় একজন সন্তান। পৃথিবীতে সন্তানের উৎপত্তিস্থল তাঁর মা।ফলে জন্মভূমি এবং মা দুটো এক অভিন্ন! মা যেমন সন্তানের পৃথিবী। তেমনি, জন্মভূমি তাঁর গর্ভে জন্ম দেওয়া প্রতিটি উদ্ভিদ, প্রাণীকুলের অভিভাবক। সেজন্য বলা হয়, যে তাঁর মাকে ভালোবাসে সে তাঁর জন্মভূমিকে ভালোবাসা।আর সে মায়ের এক করুন বিপ্লবী ইতিহাসের সাক্ষী বাংলাদেশ। যেখানে রচিত হয়েছে মজলুম এক মায়ের ইতিহাস।
যার মা থেকে নেই সে বুঝে মায়ের মধুময় ভালোবাসা কত ভয়ংকর শূন্যতা তৈরী করে।দশ, পনেরো বছরের একজন প্রবাসী বুঝে মায়ের ভালোবাসা কি। বাংলাদেশের মায়ের জন্য মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতো, আজ সে মা বাংলাদেশ ত্যাগ করবে। দেশপ্রেমিকরা এই শূন্যতার মর্ম বুঝে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মাকে বিদায় জানাতে রাস্তার ধাঁরে অপেক্ষা করে, বেদনার মুহুর্ত। আবার হৃদয়ে প্রশান্তির ছোঁয়া প্রিয় মা যেন সুস্থ হয়ে আবার পথহারা বাংলাদেশের হাল ধরে। সঙ্গে করে যেন নিয়ে আসে সাত সমদ্র তেরো নদীর ওপারে নির্বাসিত প্রিয় নেতা তারুণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমানকে।
বলতে চাই সেই মায়ের কথা ;
যিনি দেশের জন্য সন্তানের মধুমাখা মুখখানি দেখতে পারে না, যে মা দেশের জন্য তাঁর সন্তানকে স্পর্শ করতে পারে না সে মা’ই জানে এটা কত ভয়ংকর যন্ত্রনা এবং কষ্টের।
বাংলাদেশের মানুষ যাকে আপোষহীন নেতা বলে তিনি হলেন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি একাধারে দেশের জন্য স্বামীকে হারিয়েছেন, ছেলেকে হারিয়েছেন, যিনি দেশের জন্য তাঁর বড় ছেলের সাথে দীর্ঘ আট বছর দেখা করতে পারেনি, অর্ধযুগের কম সময় মিথ্যা অভিযোগে জেলখানায় বন্দী ছিলেন। এমন ঘটনার ভিন্ন উদাহরণ নেই পৃথিবীতে ।
যে দেশের হৃষ্টপৃষ্ঠে বেগম জিয়ার নাম জড়িত।
বাংলাদেশের মানুষ যার কাছে বেশি আপন, যিনি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় স্পন্দন;দেশের প্রতিটি দুর্যোগ, সংগ্রাম, সার্বভৌমত্ত্বের প্রশ্নে যিনি শতভাগ অবিচল। যাকে গনতন্ত্রের মা বলা হয়, তিনিই
বাংলাদেশের প্রিয় নেত্রী, মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গত ৭ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে চিকিৎসার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।লন্ডনে অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে চিকিৎসা চলবে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
যাহোক, একজন মা, একজন প্রধানমন্ত্রী তাঁর বয়োজ্যেষ্ঠ সন্তানের সাথে দেখা করবে অন্য দিকে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সন্তান, যিনি দেড় যুগ ধরে মায়ের অনুপস্থিতিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গনতন্ত্রের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই নেতা জনাব তারেক রহমান তাঁর মায়ের সাথে দেখা করবে; এর থেকে সুন্দর মনোরম দৃশ্য পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি হতে পারে না।যেখানে সংগ্রামী হৃদয়ের মিলন হবে যেখানে মা ছেলের মমত্বময়ী ভালোবাসার দৃশ্য ভেসে উঠবে।অবাক বিশ্ব তাকিয়ে রবে এ যেন এক বৈপ্লবিক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
লেখক: মহিউদ্দিন মাফি
সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল।