রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ বা অনাগ্রহ!
প্রথমত,এখানে অনেকগুলো ইমপ্লিমেন্টাল রিজন কাজ করে।অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বিষয় রিপ্রজেন্ট করার চেষ্টা করেছি।
নিজেদের মধ্যে দেশপ্রেম ইনস্টল করে ভাবনার জায়গা বা স্টোরেজ ব্যালেন্সিং করে নিতে হবে।
জন্মের পর দেশাত্মবোধ বা স্বদেশের ধারণা গ্রো করে না,জন্মের পর মূলত আমরা ভাষার শিক্ষা গ্রহন করে থাকি বাবা- মা, ভাই-বোন, অভিভাবকদের থেকে বা পরিবার, সমাজ খেলার মাঠ, বন্ধু-বান্ধব অথবা সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, জাতীয়তা, আমাদের পিতৃ- মাতৃপরিচয় জেনে থাকি, বংশপরম্পরায় আমাদের নৃ-তাত্ত্বিক বিষয়ে ধারণা পেয়ে থাকি। এভাবে করে আমাদের নাগরিক জীবন সামাজিক জীবন এবং রাজনৈতিক জীবনের গল্প উন্মোচিত হয়।
এখানে মূল কনসেপ্ট হলো আমরা কোন পরিবেশ পরিস্থিতিতে বেড়ে উঠেছি!
এখনে পারিপার্শ্বিক অবস্থান যদি আমাকে একইসাথে পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক সুশাসন, নৈতিকতার শিক্ষা সর্বপরি আমার অধিকার এবং রাজনৈতিক শিক্ষা সুষমভাবে প্রদান করে থাকে তাহলে আমি আদর্শ নাগরিক জীবন লাভ করতে পারবো। আর যদি বিকল্পভাবে আমার বেড়ে উঠা হয় , যদি সুষম শিক্ষার ঘাটতি থাকে – তাহলে আমার নেতিবাচক ধারনার বিষয়টি স্বাভাবিক।
মনে করেন,আমার পরিবার আমাকে রাজনৈতিক শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু নেতিবাচক ধারণা দেয় অথবা অধিকার আদায় করার ব্যাপারে নিরুৎসাহী করে; তাহলে আমি রাজনীতি বিমুখ হবো, এটা স্বাভাবিক। আর যে রাজনীতি বিমুখ হয় তাঁর মধ্যে স্বদেশ প্রেম বা দেশাত্মবোধ দুর্বল হয়!যে অধিকার সচেতন তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম বিদ্যমান। আর অধিকারচেতা ব্যক্তিই রাজনৈতিক এবং সজ্জন।
দ্বিতীয়ত, স্বার্থবাদীদের রাজনীতি মানুষকে রাজনীতি বিমুখ এবং নিরুৎসাহিত করে।
ধরেন, একজন স্বার্থক নাগরিক বা সুবিধাবাদী নাগরিক কোনভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের সান্নিধ্যে লাভ করলো! সে ঐ নাম ব্যবহার করে সমাজে লোপাট রাহাজানি চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি জমি দখল বালু উত্তোলন মানুষের সাথে জুলুম করলো।ঠিক একইভাবে তাঁর দল ক্ষমতা চ্যূতির ধারপ্রান্তে এমন মুহুর্তে উক্ত নাগরিক দেশ থেকে পালায়ন করলো! তাঁর দল ২০ বছর পর ক্ষমতায় এলো সে দেশে ফিরে তাঁর পূর্ব রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পুনরাবৃত্তি করলো! আচ্ছা বলেন এখানে কার লাভ হলো? তথাকথিত নাগরিক দ্বারা তাঁর সংগঠন কি উপকৃত হলো! তার দেশ উপকৃত হলো!কি়ংবা তাঁর সমাজ উপকৃত হলো! আল্টিমেটলি তাঁর দ্বারা সে নিজে উপকৃত হলো।পাশাপাশি সে তাঁর কৃতকর্মের দ্বারা অন্য নাগরিকদেরকে রাজনীতিতে নিরুৎসাহিত করলো। রাষ্ট্র তাঁর সু-নাগরিক গোষ্ঠী গোষ্ঠী থেকে বঞ্চিত হলো।
আবার মনে করেন, বাংলাদেশে বসবাস করে কেউ যদি-প্রজন্মকে ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি পোশাক পরিচ্ছদ খাদ্য পুষ্টি চেতনা শিক্ষা অথবা পাকিস্তানি সংস্কৃতি পোশাক পরিচ্ছদ খাদ্য পুষ্টি চেতনা শিক্ষা প্রদান করে।
আল্টিমেটলি রাষ্ট্র কি উপকৃত হলো! রাষ্ট্র তাঁর গর্ভে কিসের জন্ম দিল! দালাল নাকি সু- নাগরিক?
এক কথায় দেশ তাঁর নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য প্রভৃতি থাকা সত্যেও অবজ্ঞার স্বীকার হলো। সার্বভৌমত্ব, গনতন্ত্র, সংস্কৃতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হলো!!
সর্বপরি, সুষম নাগরিক শিক্ষা সুনাগরিক তৈরি করে। একজন সু-নাগরিক পরিবার সমাজ রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করবে; জন্ম হবে নেতৃত্বের।নেতার নেতৃত্বে রাষ্ট্র বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচিয়ে বলবে, ” আমিই বাংলাদেশ”।
দিনশেষে আমি বাংলাদেশী। আমি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী। আমার পরিচয় হোক বাংলাদেশের দালাল।
সবশেষ, আসুন সন্তানকে সমভাবে নৈতিক পারিবারিক সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শিক্ষা (সুষম নাগরিক শিক্ষা) প্রদান করে সার্বভৌমত্ব রক্ষার হাতিয়ার বানাই।
মহিউদ্দিন সিকদার মাফি
সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল।