শুক্রবার

১৬:৪২:১৭

১৬ মে, ২০২৫

২৯ বৈশাখ, ১৪৩২

১৬ জিলকদ, ১৪৪৬

Edit Content

শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

  1. Home
  2. Lead
  3. ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াত

গনঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র রাজনীতি এবং প্রিয় বিদ্যাপিঠ ঢাকা কলেজ

মহিউদ্দিন মাফি:

বাংলাদেশের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজ এবং ক্যাম্পাস রাজনীতির চালচিত্র নিয়ে কিছু কথা।ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে মিশ্রিত,১৮৪ বছরে পদার্পন বাংলাদেশের প্রাচীন বিদ্যাপিঠ ঢাকা কলেজ।যে কলেজ থেকে দেশী-বিদেশি হাজারো গুণী মানুষের জন্ম।প্রাচীনতম এই প্রতিষ্ঠানে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র ইন্টারন্যশনাল ছাত্রাবাসও করা হয়েছিল,রয়েছে গৌরবজ্জ্বল রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ইতিহাস ।কলেজের প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় দেখা যায়; Know Thyself – নিজেকে জানো।

বিগত দেড় যুগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চালচিত্র দেখলে বুঝা যায় আমরা একটি অন্ধকারচ্ছন্ন সময় পার করে এসেছি-
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আধিপত্য বিস্তার, গেষ্টরুম নির্যাতন,গণরুম, ধর্ষন, হত্যা, সন্ত্রাস, বিভৎস পরিবেশ এবং অন্যায়-অত্যাচার, চাঁদাবাজি, লুটপাট, মিথ্যা মামলা, হত্যা, গুম, খুনের এক অবয়ারন্য।পেসিস্ট পতিত বাংলাদেশে নতুন সূর্য উদিত হয় দীর্ঘ বিপ্লব সংগ্রাম ত্যাগের পটভূমিতে।

বিপ্লবীদের ভাষায়-
“অস্তমিত সূর্যের উড্ডয়নে
আমি উল্লাসিত যোদ্ধা।
আমি দিগ্বিদিক যাযাবর সৈনিক
রক্তছোঁসা বাজপাখির কবল থেকে আমি মুক্ত মুক্তির উল্লাসে আমি চিরঞ্জীব”

গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে প্রিয় অঙ্গনে ছুটে চলা। বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির নবধারার উন্মেষ ।এ যেন শত শত তরুণ ছাত্রদের সাথে সাক্ষাৎ, সিনিয়র-জুনিয়র, সাবেক-বর্তমান,রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক গুণী ব্যক্তিজনের মহামিলনস্থল।কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, হলপাড়া, মুক্ত মঞ্চ, টেনিস গ্রাউন্ড সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তারুণ্যমেলা। ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের ভালো-মন্দ,দলীয় আদর্শ,ইতিহাসে ছাত্রদের অবদান নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরে।সুন্দর সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন সাঁঝাতে কেউ কেউ পরিচ্ছন্নতা অভিযান,খেলাধুলা, হলপাড়ায় শীতকালীন ব্যডমিন্টন টুর্ণামেন্ট, বলিবল আরো কত কি! শাহাদাত,যুবকের টি স্টলে রুমরমা ব্যবসা – ভুট্টো মিয়ার দোকানে দুপুরের খাবার!পেসিস্ট আমলে কেউ এমন উন্মাদনা দেখছে বলে মনে নেই!সময়োপযোগীতার গুরুত্ব এবং সঠিকভাবে ব্যাবহারের সক্ষমতা অর্জনের লড়াই। পরিবার, সমাজ,পাড়া- মহল্লা, গ্রাম, শহর, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, রাষ্ট্র; নেতৃত্বদানের স্টাডিক্ষেত্র, যা ধারাবাহিক দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়ার অংশবিশেষ।
সময়ের পরিক্রমায় ছাত্রদলের অতীত গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।যেখানে শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচির ওনেতৃত্বের পরিধি বিস্তারের লক্ষ্যে নানাবিধ পরিকল্পনা,সংলাপ,মতামত, নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য হেল্প ডেস্ক, আবাসন,ক্যাম্পাস সংস্কার, ছাত্রদের বিপদে পাশে থাকা, খোঁজখবর রাখা, ভালো মন্দে অংশীদার হওয়া,দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা, রক্তদান,পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস, খেলাধুলার উৎকর্ষতা।যেখানে নেই কোন অযুহাত – জোর করে মিটিং কিংবা মিছিলে নেওয়া, যেখানে নেই অস্ত্রের মহড়া, নেই কোন বড় ভাই!অভ্যুত্থান পরবর্তী বিদ্যমান পরিস্থিতি ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসকে দৃঢ় এবং শক্তিশালী করে।তবে ক্যম্পাস রাজনীতিতে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার নজির থাকাটাও স্বাভাবিক।

আমরা জানি,ঐতিহাসিকভাবে ইনস্টিটিউশনগুলো নেতৃত্ব তৈরীর কারখানা যেখান থেকে হাজার হাজার দেশপ্রেমিক যোদ্ধার জন্ম হয়। যারা রাষ্ট্রের সংকটময় মুহূর্তে নিজেদের উৎস্বর্গ করতে প্রস্তুত থাকে। যেমন – ১৯৭১ স্বাধীনতা যুদ্ধ,৬৯ এর গনঅভ্যুত্থান,৯০ স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রাম, ২৪ এর গনঅভ্যুত্থানে যারা সাধারণ ছাত্রজনতার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। সুতরাং ছাত্ররাজনীতি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ রক্ষাকবচ।

যাহোক,জুলাই বিপ্লব পরবর্তী ক্যাম্পাসে কখনো আধিপত্যা বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কিংবা অস্ত্রের মহড়া কোন কিছুই পত্যক্ষ করিনি।যা আমার রাজনীতির স্পৃহাকে তরান্বিত করে।যেখানে শত শত তারুণ্য বাংলাদেশপ্রেমী সংগঠন -ছাত্রদলের পতাকাতলে আসছে।নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় নিজেকে উপযুক্ত করে তোলার অবিরাম ছুটে চলা।এটা রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য শুভ সংকেত।
ছাত্রদল বিপ্লব পরবর্তী ক্যাম্পাসগুলোতে গনতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্ররাজনীতির সাতকাহন তুলে ধরেছে! নিষিদ্ধ সংগঠন ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতির নামে এক ধরনের ভূল ন্যারেটিভ দাঁড় করিয়ে গেছে।যেখানে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা নেতিবাচক রাজনীতি হিসেবেই মনে করতো!ছাত্র রাজনীতি এবং উন্নয়নের অন্তরায় মনে করতো। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্রদল দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতির সঠিক দিক এবং ছাত্ররাজনীতির গুরুত্ব তোলে ধরতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদলের নেতৃত্বে টিমওয়ার্ক করে ছাত্র-ছাত্রীদের মনোভাব এবং ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে মতামত গ্রহন করা হয়। ছাত্রদলের সভাপতি মো রাকিবুল ইসলাম রাকিব ছাত্রদলের নির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তীতে ছাত্রদলের করণীয়গুলো দূত বাস্তবায়নে কাজ করেন।
ফলোশ্রুতিতে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতির নতুন ধারার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
যা আমার প্রিয় শিক্ষাঙ্গনে পত্যক্ষ করেছি। যা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে গ্রহন করে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উক্ত উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়ে সাধারণ ছাত্ররা ক্যাম্পাস রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের জন্য শতভাগ আশাবাদী। অপরাপর ছাত্রসংগঠনগুলো গনতান্ত্রিকভাবে তাঁদের রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। ছাত্রদলের এমন রাজনৈতিক আচরন জাতিগঠনে ভূমিকা রাখবে।

মহিউদ্দিন মাফি
সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল।

আরও পড়ুন

Scroll to Top