ম্যাচের শুরুর দিকেই শক্তি হারিয়ে ফেলে মোহামেডান। খেলার বয়স ২০ মিনিট হতে না হতেই দশ জনের দল হয়ে যায় তারা। কিন্তু তারপরও হাল ছেড়ে দেয়নি সাদা-কালো জার্সিধারীরা। উল্টো আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে করল গোল উৎসব। শনিবার সৌরভ দেওয়ানের জোড়া গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৫-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে নতুন বছর শুরু করল মোহামেডান। এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এবারের মৌসুমে শতভাগ জয়ের দেখা পেল কোচ আলফাজ আহমেদের দল। এর আগে ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্বে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল মোহামেডান।
অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে স্যামুয়েল বোয়াটেংর ডাবল হ্যাটট্রিকে ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে ৬-১ গোলে ধসিয়ে দিয়েছে রহমতগঞ্জ। দলের হয়ে ছয়টি গোলই করেছেন বোয়াটেং। ওয়ান্ডারার্সের হয়ে একটি গোল করে ব্যবধান কমান শুধু সাইফ সামসুদ।
বিরতির পর রীতিমতো গোলের বন্যা বইয়ে দেয় দারুণ ফর্মে থাকা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের ম্যাচে স্কোরশিটে নাম লেখালেন মনজির কুলদিয়াতি, এমানুয়েল সানডে, সৌরভ দেওয়ানরা। ছয় ম্যাচে ১৮ পয়েন্টের পুঁজি নিয়ে তালিকার রাজত্ব আরও পোক্ত করল মোহামেডান।
আগ্রাসী ফুটবল দিয়েই লড়াই শুরু করে মোহামেডান। তবে জালে বল জড়াতে একটু অপেক্ষায় করতে হয় তাদের। ম্যাচের ২০তম মিনিটে ভয়ানক ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মোহামেডানের শাকিল আহাদ তপু। উড়ন্ত বলে মাথা ছোঁয়াতে গিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর অনিক ঘোষের গায়ে পা দিয়ে আঘাত করে ফেলেন তিনি! প্রচণ্ড ব্যথায় মাঠেই শুয়ে ছটফট করতে থাকেন। তাতেই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন তপু। সেই কার্ডই রূপ নেয় লাল কার্ডে।
বিরতির পর খেলা শুরু হতেই লিড নেয় মোহামেডান। মোজাফ্ফরভের কর্নার কিক কুলদিয়াতির মাথা ছুঁয়ে কাঁপিয়ে দেয় জাল। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে রক্ষণের দুবর্লতার কারণে দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে চট্টগ্রাম আবাহনী। আরিফ হোসেনের ক্রস শট থেকে গোলমুখে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সানডে। লক্ষ্যভেদ করতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি তার।
লড়াইয়ের ৬৩ মিনিটে আর্নেস বোয়াটেংয়ের শট পোস্টে আঘাত করে। ফিরতি বল পেয়ে গোল ব্যবধান ৩-০ তে নিয়ে যান সৌরভ দেওয়ান। এতেই ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ চলে যায় মোহামেডানের হাতে। ম্যাচের শেষভাগে আরও দুই গোল খেয়ে লড়াই থেকে শতভাগ ছিটকে পড়ে চট্টগ্রাম আবাহনী।
চলতি লিগে এ নিয়ে টানা ছয় ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ হজম করল বন্দরনগরীর ক্লাবটি। তার আগে পেনাল্টি থেকে সান্ত্বনার একটি গোল এনে দেন ইমতিয়াজ সুলতান জিতু (৯০+৬ মিনিট)। বক্সের মধ্যে রাজীবের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন মাঠের রেফারি। এখন পর্যন্ত কোনো পয়েন্টের অর্জন করতে না পারায় চট্টগ্রাম আবাহনী ঘুরপাক খাচ্ছে তালিকার তলানিতে।
অবশ্য গোলের বন্যা দিয়েই লিগ শুরু করেছিল মোহামেডান। প্রথম ম্যাচেই তারা ৬-০ গোলে ধসিয়ে দিয়েছিল ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে। পরে বাংলাদেশ পুলিশকে ৩-১ গোলে ধরাশায়ী করে সাদা-কালোরা।