একটা সময় বার্সেলোনার ম্যাচ দেখতে নির্ঘুম রাত কাটত ফুটবল অনুরাগীদের। এটা যে খুব বেশি দিন আগের গল্প, তা কিন্তু নয়, সেটা তো সবারই জানা। নিকট অতীতের সেই দিনের কাহিনী এখনো ক্রীড়াপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। যার জন্য এত আগ্রহ আর আকর্ষণ। তিনি আর কেউ নন- লিওনেল মেসি। প্রতিপক্ষ শিবিরে আক্রমণভাগে আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের সঙ্গী হতেন লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার জুনিয়র। ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বার্সেলোনার তিন মৌসুমে ন্যু ক্যাম্পের হয়ে মাঠের লড়াইয়ে কতশত প্রত্যাবর্তনের রূপকথার গল্প যে লিখেছেন এ ত্রয়ী তারকা- তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বার্সাকে ২০১৪-১৫ মৌসুমে উপহার দিয়েছেন ‘ট্রেবল’। তিনজনে মিলে এনে দিয়েছেন ৩৬৪ গোল। আর সতীর্থদের ১৭৩টি গোলে রেখেছেন অবদানও।
আগ্রাসী ফুটবলের ফুল ফোটাতে ‘এমএসএন’ ত্রি-ফলা ছিল সিদ্ধ হস্ত। তাদের সাজানো আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা উপভোগ করতে স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে টিভির পর্দার সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়তো ক্রীড়ামোদীরা। মেসি-সুয়ারেজ-নেইমারকে ফের এক সঙ্গে একই দলের জার্সিতে দেখা গেলে কেমন হবে? সন্দেহ নেই, এমন প্রশ্নের উত্তরে একবাক্যে সবাই বলবেন, যারা অন্তত ফুটবলকে মনে-প্রাণে ভালোবাসেন, এই ‘ত্রি-ফলা’কে দেখতেই চাতক পাখির মতো মুখিয়ে রয়েছে তাবত ফুটবল দুনিয়া। দর্শকদের সেই মনের বাসনা পূরণ হতে পারে শিগগিরই। তেমন আভাসই দিয়েছেন নেইমার।
প্যারিস ছেড়ে মেসি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের বর্তমান ঠিকানায় পরে ঘাঁটি গেড়েছেন উরুগুয়ের তারকার ফরোয়ার্ড সুয়ারেজও। ইন্টার মিয়ামির ফরোয়ার্ড লাইনে পার্টনারশিপের গল্প লিখে চলেছেন দুজনে অনেক দিন ধরে। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান মেগাস্টার নেইমার পড়ে রয়েছেন কেবল সৌদি আরবে। তার আগে ২০১৭ সালে নেইমার দলবদলের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে গিয়েছিলেন পিএসজিতে। তাতেই ভেঙে যায় খ্যাতির চূড়ায় বসা বার্সার ‘এমএসএন’ আক্রমণভাগ। এখন মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নিজের সাবেক দুই ক্লাব সতীর্থ ও বন্ধুর সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথাই চিন্তা-ভাবনা করছেন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে, সম্ভাবনাটা একেবারেই উড়িয়ে দেননি নেইমার। আল হিলালের এ তারকা ফুটবলার ভক্ত-সমর্থকদের আশার পালে হাওয়া দিয়ে বলেন, ‘কে জানে! ফুটবল তো বিস্ময়ে ভরপুর।’ সম্প্রতি গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ডে প্লেয়ার ক্যারিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন নেইমার। পরে সিএনএন স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন তিনি।
মিয়ামিতে মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে মিলিত হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা মনের কোণে লালন করে চলেছেন নেইমার। এটা বাস্তবে রূপ নিলে তার চেয়ে বেশি খুশি আর হবেন না কেউ। এ নিয়ে নেইমারের ভাষ্য, ‘অবশ্যই, মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে আবারও খেলতে পারাটা হবে অবিশ্বাস্য। ওরা আমার বন্ধু। এখনো আমাদের মাঝে কথা হয়। ত্রয়ী (আক্রমণভাগ) পুনর্জীবিত করাটা হবে আকর্ষণীয় ব্যাপার। আল হিলালে আমি সুখেই আছি। সৌদি আরবে ভালোই কাটছে।’ ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে পারে বর্ণিল ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। নেইমার নিজেও জানালেন তেমনটা, ‘আমি চেষ্টা করব সেখানে (২০২৬ বিশ্বকাপ) থাকার। আমি জানি, এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। আমার শেষ সুযোগ। সেখানে খেলার জন্য আমি সব রকম চেষ্টাই করব।’