ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক ভিডিও বিবৃতিতে এ ঘোষণা করেন হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান ও যুদ্ধবিরতির জন্য সংগঠনটির পক্ষে প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া।
তিনি বলেন, হামাস ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার স্বার্থে দেওয়া কোনো আংশিক চুক্তিকে গ্রহণ করবে না। খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘গাজায় আংশিক যুদ্ধবিরতি নেতানিয়াহুর অব্যাহত যুদ্ধ, গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের নীতির রাজনৈতিক বৈধতা দেওয়ার কাজ করবে। তবে যুদ্ধবিরতিতে যথাযথ চুক্তির জন্য আলোচনায় হামাস প্রস্তুত রয়েছে জানান তিনি।
হামাসের প্রধান আলোচক বলেন, ‘সব ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে দখলদারদের হাতে আটক মতৈক্য হওয়া সংখ্যায় আমাদের বন্দিদের মুক্তি, যুদ্ধের পূর্ণ অবসান, গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার, পুনর্নির্মাণ কাজের সূচনা এবং অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে পরিপূর্ণ আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
এর আগে সোমবার কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরাইল হামাসের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব পাঠায়। এ প্রস্তাব অনুসারে ৪৫ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজায় আটক ১১ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তির কথা ছিল।
এ প্রস্তাবের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোকে নিরস্ত্র করার দাবি জানায় ইসরাইল। এ বিষয়ে তখন হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা এ প্রস্তাব বিবেচনা করে দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানাবে।
এদিকে গাজায় অব্যাহতভাবে বর্বর হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা পর্যন্ত অন্তত ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন জানায় সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এর মধ্যে দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের বনি সুহেইলায় এক বাড়িতে ইসরাইলি বোমা হামলায় ১০ সদস্যের পুরো পরিবারের সবাই নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় ৪০ জন নিহত ও ৭৩ জন আহত হয়েছেন।
এ নিয়ে ১৮ মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৯১। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৬৪। সবমিলিয়ে গাজায় ১৮ মাসের আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৬৫। আহত হয়েছেন আরো এক লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন ফিলিস্তিনি। গাজায় চলমান এ আগ্রাসনের মধ্যে ইসরাইলকে বাংকারবিধ্বংসী বোমা দিয়েছে আমেরিকা।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলি বার্তা সংস্থা কানে প্রকাশিত এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, আমেরিকার ৯টি পরিবহন বিমান বাংকারবিধ্বংসী বোমা ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে তেল আবিবের কাছাকাছি নেভাতিম বিমান ঘাঁটিতে নেমেছে। খবরে দাবি করা হয়, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হলে যৌথভাবে হামলার জন্য এ অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।