যৌন পেশা স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ সব ধর্মের বিরোধী। এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে বিতর্কিত প্রতিবেদন বাতিল করে নারী সংস্কার কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন : বিতর্ক ও আলোচনা’শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব দাবি জানান। ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের একটি সংস্থা এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রবের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে নারী কমিশনের বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সার্বিক মূল্যায়ন করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি ড. এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, কমিশনের এসব সুপারিশ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান তৈরি হয়েছে। অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীকে সমান অধিকার, উত্তরাধিকার আইনে সমান অধিকার এবং শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা একবারে অযৌক্তিক। এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। তাই এই সুপারিশ বাতিল করে নতুনভাবে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, প্রতিবেদনে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করার নামে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান পারিবারিক আইনের সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পতিতাবৃত্তিকে শ্রমিকের স্বীকৃতির সুপারিশ করা হয়েছে, যা একজন নারীকে পৈশাচিক পুরুষের কাছে আরো নগণ্য করে তুলবে। নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে। সমাজে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি বিরাজ করবে। অনতিবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে নতুনভাবে একটি কমিশন গঠন করার আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য দেন— সম্মিলিত নারী প্রয়াসের সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী আরা খানম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, আইপাস বাংলাদেশের সিনিয়র অ্যাডভাইজর ডা. শামিলা নাহার, অ্যাডভোকেট সাবিকুন নাহার মুন্নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক আরিফুর রহমান অপু, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শামীমা তাসনীম, ডা. শাহীন আরা আনোয়ারী, মসজিদ মিশনের মহাসচিব ড. খলিলুর রহমান মাদানী, লে. কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান বীরপ্রতীক, সম্মিলিত নারী প্রয়াসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হাসিনা মমতাজ মারিয়া, মাসজিদুল জুমা কমপ্লেক্সের খতিব মাওলানা আবদুল হাই সাইফুল্লাহ, মানারাত ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. এম আবদুল হান্নান, বুয়েটের ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস এবং সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম প্রমুখ।